বিশেষ সংবাদ : রাজশাহীতে জামায়াতের ভোটের ছক
ভোটের দিনখন ঠিক না হলেও রাজশাহীতে তিন প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমেছে জামায়াতে ইসলামী। অন্তরালে থেকে ভোটের মাঠে সক্রিয় রয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুতে দেশজুড়ে সহিংসতা চালানো এ দলটির নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যেই তারা রাজশাহীর তিনজন প্রার্থীও ঘোষণা করেছে। যাদের একজন সিটি করপোরেশন এবং দুইজন সংসদীয় আসনে নির্বাচন করবেন।
এরা হলেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, জামায়াত নেতা ও কাটাখালি পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যাপক মাজেদুর রহমান এবং রাজশাহী মহানগরের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ সিদ্দিক হোসাইন। এদের মধ্যে সিদ্দিক হোসাইন সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে, মুজিবুর রহমান রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে এবং মাজেদুর রহমান রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে প্রার্থী হচ্ছেন। জামায়াতের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্রমতে, অন্তরালে থেকেই রাজশাহীতে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সক্রিয় রয়েছে জামায়াত নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে গোপনে তাদের প্রার্থীর পক্ষেও প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা। ভোটের প্রচারণা ছাড়াও নির্বাচনের অর্থ সংগ্রহের কর্মকান্ডও চালাচ্ছে সংগঠনের নেতারা।
সূত্রমতে, গত সোমবার পবা উপজেলার নওহাটা এলাকায় যে ছয় জামায়াত-শিবির নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হন তারা নির্বাচনী প্রচার ও অর্থ সংগ্রহের বিষয় নিয়ে বৈঠক করছিলেন। আটক একজনের কাছে চাঁদা আদায়ের রশিদ পেয়েছে পুলিশ। এর আগে গত ৬ ডিসেম্বর কাটাখালি পৌরসভার বেলঘরিয়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময় তাদের নির্ধারিত প্রার্থী মাজেদুর রহমানের স্ত্রীসহ জামায়াতের ১২ নারী সদস্য আটক হন। এছাড়াও স্যোসাল মিডিয়াতেও নিজের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণাতেও সক্রিয় রয়েছে দলটির নেতাকর্মীরা।
রাজশাহীতে সম্প্রতি আটক জামায়াত নেতাকর্মীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে থাকবে না জামায়াত। একক প্রার্থী দিয়ে নিজের অবস্থান যাচাই করতে চায় যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত এই দলটি। ইতোমধ্যেই তারা রাজশাহী মহানগরের সেক্রেটারি ও বিনোদপুর ইসলামিয়া কলেজের অধ্যক্ষ সিদ্দিক হোসাইনকে প্রার্থী ঘোষণা করে গোপনে নির্বাচনী প্রচারে নেমেছে তাদের নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে বর্তমানে জামায়াতের নারী কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন।
সূত্রমতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জোটগত নির্বাচন করবে কি না সে ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি জামায়াতে ইসলামী। তবে একক ভাবে নির্বাচন করতে সারাদেশে তারা ৪০টি আসনে প্রার্থী দিবে। আর জোটগত নির্বাচনে গেলে বিএনপির কাছে আসন চাইবে ২০টি। এর মধ্যে রাজশাহীর দুইটি আসন। রাজশাহী-১ ও রাজশাহী-৩ এই দুইটি আসনে এবার কোনভাবেই বিএনপিকে ছাড় দিতে চায়ছে না তারা। ফলে আগেভাগেই তারা এ দুই আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে।
জামায়াতের একটি সূত্রমতে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের কাছে রাজশাহীর দুইটি আসন চায় জামায়াত। পরবর্তি নির্বাচনে ছাড় দেয়ার আশ^াসে রাজশাহী-১ আসন ছেড়ে দেয় তারা। তবে প্রার্থী দেয় রাজশাহী-৩ আসনে। সারাদেশে জোটগত নির্বাচন করলেও এ আসনে জামায়াত নেতা আতাউর রহমানকে প্রার্থী করে। ফলে জামায়াতকে নিয়ে নির্বাচন করতে চাইলে রাজশাহীর দুইটি আসন ছাড়তে হবে বিএনপিকে বলে মনে করছে ওই সূত্রটি।
No comments